ঈদ সামনে রেখে রাজধানীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অপরাধী চক্র। তারা বিভিন্ন এলাকায় চালাচ্ছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা। জানা যায়, এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বিদেশে বসে নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংন্থার (ইন্টারপোল) রেড নোটিশপ্রাপ্ত পলাতক সন্ত্রাসীরা। একসময় যারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার ত্রাস ছিল, এখন তাদের কেউ থাইল্যান্ডে, কেউ ভারতে, কেউ দুবাইয়ে, কেউবা অন্য কোনো দেশে বসে বাংলাদেশে তাদের সহযোগীদের মাধ্যমে অপরাধমূলক তৎপরতা চালাচ্ছে। তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ডের একটি হলো টেলিফোনে চাঁদা দাবি করা। চাঁদা না দিলে বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয় অথবা ডাকাতি করা হয়। এসব করতে গিয়ে কেউ গ্রেফতার হলে তার জামিনেরও ব্যবস্থা করা হয় বিদেশ থেকে। অর্থাৎ অপরাধ করে পার পাওয়ার ব্যবস্থাও পাকাপোক্ত করে রেখেছে তারা। বোঝাই যায়, এই অপরাধীদের সঙ্গে প্রভাবশালীদের যোগসাজশ রয়েছে।
বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসীদের এভাবে বেপরোয়া হয়ে ওঠার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। যেহেতু বারবার রেড নোটিশ করেও এদের আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না, সেহেতু দেশে তাদের সহযোগীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এজন্য পুলিশের গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও জোরদার করা প্রয়োজন। যেভাবেই হোক, অপরাধ দমন করে রাজধানীসহ সারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এমনিতেই ঈদ সামনে রেখে দেশে নানা পর্যায়ের অপরাধীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। এবারও রাজধানীতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছিনতাইকারী চক্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মাঝেও ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। ছিনতাইকারীরা এখন আগ্নেয়াস্ত্র বা ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করছে। তাই আমরা মনে করি, অপরাধ দমনের বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আরও বেশি গুরুত্ব পাওয়া উচিত। অভিযোগ আছে, ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনায় অনেক থানা মামলা নিতে চায় না। অপরাধ বৃদ্ধি পাওয়ার এটিও একটি কারণ হতে পারে। অবশ্য পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলছে, ছিনতাই-ডাকাতির মামলা নিতে যদি কোনো থানা অনীহা প্রকাশ করে, তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডিএমপি কমিশনারের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। আমরা এ নির্দেশনার যথাযথ বাস্তবায়ন দেখতে চাই। জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে তার দায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরই বর্তাবে।