Blog

মনে মগজে দুর্নীতি প্রতিকার মিলবে কবে?

দুর্নীতি আসলে একটা কঠিন চক্র। এই চক্রকে ভাঙতে হলে সবাইকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদেরকে ঘৃণা করতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের ঘাড়ে সব দায়িত্ব দিলে লাভ হবে না। তাদের একার পক্ষে দুর্নীতির শিকড় উপড়ানো সম্ভব নয়। দুর্নীতি থামাতে জনগণের সোচ্চার আন্দোলন দরকার। এ ক্ষেত্রে সরকার, সুশীল সমাজ, এনজিও, দুদক-কেউই জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারেনি। সবাই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে যে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস দরকার, সেটা কবে জেগে উঠবে-এটা দীর্ঘ সময় ধরে একটি প্রশ্ন হয়েই আছে।

এই ঘুম ভাঙাতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস নিতেই হবে। গত এক যুগে অর্থনৈতিক নানা সূচকে আমাদের দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতির রাশ টেনে ধরতে না পারলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না, উন্নয়নের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছাবে না। যত উন্নয়ন, তত দুর্নীতি; এই যদি হয় বাস্তবতা, তাহলে বৈষম্য আরও বাড়বে

অসৎ হওয়া বা কাউকে অসৎ বানানো, ভুল পথে চালিত হওয়া বা কাউকে ভুল পথে চালিত করা, বিপথগামী বা বিকৃতি করা, ন্যায়ভ্রষ্ট, সত্যের বিপরীত, যুক্তির বিপরীত, ন্যায়পথ থেকে বিচ্যুতি, অস্বাভাবিকতার প্রতি প্রবণতা, অসদাচরণ, নৈতিক পদস্খলন, কর্তব্যে অবহেলা, অন্যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার ইত্যাদি হলো-দুর্নীতির আভিধানিক অর্থ। সাধারণভাবে দুর্নীতি বলতে আমরা বুঝি- প্রাপ্ত দায়িত্ব বা অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের বা কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষা করা। দুর্নীতি মানুষের সহজাত কু-প্রবৃত্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম। কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য এই ছয়টি রিপু মানুষকে দুর্নীতির দিকে ধাবিত করে এবং মানবজীবনে অন্যায়- অত্যাচার, ধন-সম্পদের লোভ-লালসা, আত্মসাৎ প্রবণতা, ঘুষ, হিংসা-বিদ্বেষসহ নানা অনৈক্যের উদ্ভব ঘটায়। দুর্নীতি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দুর্নীতিবিরোধী জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ২০০৩ সালে জাতিসংঘে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কনভেনশন পাস হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর ৯ই ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই) দুর্নীতির ধারণাসূচক প্রতিবেদন প্রতিবছর প্রকাশ করে। ২০২২ সালের প্রতিবেদনে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। এর আগের বছর অবস্থান ছিল ১৩তম। এক ধাপ অবনমন হয়েছে। অবশ্য একসময় বাংলাদেশের নাম এ তালিকায় এক নম্বরে ছিল। সর্বশেষ প্রকাশিত তালিকায় সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে তালিকার শীর্ষে আছে ডেনমার্ক। আর সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হচ্ছে সোমালিয়ায়।

২০১৯ সালের ২৬শে নভেম্বর মার্কিন দূতাবাস থেকে একটি রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশে এমন কোনো সেক্টর বা খাত নেই যে, যেখানে দুর্নীতি ছাড়া কোনো কাজ করা সম্ভব। সব আমলেই সরকার-সমর্থকরা এসব রিপোর্ট মানতে চান না। কিন্তু নিছক অস্বীকার করে তো আর দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না। দেশপ্রেমের অভাব, মূল্যবোধ ও নৈতিক অবক্ষয় দুর্নীতির কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম। দেশপ্রেম হলো- এমন একটি ধারণা যা মানুষকে সব অন্যায় থেকে দূরে রাখে। দেশের প্রতিটা জিনিসের প্রতি ভালোবাসার সৃষ্টি করে। আর মূল্যবোধ হলো এমন একটি চেতনা যা মানুষকে ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য শিক্ষা দেয়। আমাদের মনে যদি সত্যিকারের দেশপ্রেম বা দেশের মানুষের প্রতি বিন্দুমাত্র ভালোবাসা থাকতো তবে হয়তোবা দুর্নীতি আরও কমানো যেত। অভাব অনটন নয়, নৈতিক অবক্ষয়ই দুর্নীতির মূল কারণ। দেশের সব প্রতিষ্ঠানেই কমবেশি দুর্নীতি রয়েছে-এমন মন্তব্য করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান।

দুর্নীতির অর্থ যদি হয় ন্যায়পথ থেকে বিচ্যুতি, দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অসততা তাহলে দুর্নীতিবাজ হওয়া থেকে কেউ রেহাই পাবে না। মোটামুটি যাদের কাছে দুর্নীতি করার সুযোগ আছে, তাদের বেশির ভাগই দুর্নীতির সুযোগটা নেয়। সুযোগের অভাবে সৎ কথাটা আলোচিত। সরকারি চাকরিজীবীরা সুযোগ বেশি পান বলে তাদের দুর্নীতির পরিমাণ বেশি। আর অন্যরা কম পান বলে দুর্নীতি কম। কমবেশি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মননে মগজে দুর্নীতির ছাপ স্পষ্টত দেখা যায়। সুযোগ পেলেই একজন রিকশাচালক অধিক ভাড়া হাঁকে। শ্রমিক কাজে ফাঁকি দেয়। অফিসের পিয়ন, গৃহকর্মীও অপচয়-অপব্যবহার করে। ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ায়, ভেজাল মেশায়, ওজনে কম দেয়। বর্তমানে তো দুর্নীতি সম্পর্কে ধারণাটাই পাল্টে গেছে। নিয়ম বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত টাকা (ঘুষ) নিয়ে যেকোনো কাজ উদ্ধার করে নেয়া এখন বাংলাদেশে যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। বরং যিনি ঘুষ নিয়ে কাজটা করে দেন, তাকে সবাই উপকারী মানুষই মনে করে।

দুর্নীতিবাজ হলেন তিনি, যিনি টাকা নিয়ে কাজটা করে দেন না বা নেয়া ঘুষও ফেরত দেন না। দুর্নীতি এখন মননে মগজে গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে গেছে। বিয়ের আলোচনায় ছেলের উপরি আয় কেমন, এই প্রশ্ন খুব স্বাভাবিকভাবেই করেন। উপরি আয় মানেই যে দুর্নীতি, সেটা সবাই জেনেও সাদরে গ্রহণ করেন। দুর্নীতিবাজ এলাকায় গিয়ে মসজিদ-মাদ্রাসায় দান খয়রাত করে দানবীর বনে যান। আমরা জানি, টাকাটা দুর্নীতির, কিন্তু প্রশ্ন করি না। মানুষও এখন প্রকাশ্যেই দুর্নীতি করে। আগে যেটুকু চক্ষুলজ্জা ছিল, এখন তাও নেই। সরকারি চাকরিতে ট্যাক্স, কাস্টমস, পুলিশের চাহিদা বেশি; কারণ এখানে দুর্নীতি করার সুযোগ বেশি। সমাজে তাদের গ্রহণযোগ্যতাও বেশি। বেতন পান ৫০ হাজার টাকা, বাসা ভাড়া দেন ৬০ হাজার টাকা, সন্তান পড়ে নামি স্কুলে, বছর বছর ইউরোপ-আমেরিকা ট্যুর করেন। আমাদের চারপাশে এমন লোকের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু আমরা কখনো প্রশ্ন করি না। কখনো কারও টাকার উৎস সম্পর্কে আমরা জানতে চাই না। ফলে দুর্নীতি যেন একধরনের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে যায়। নতুন শিক্ষা কারিকুলাম অভিজ্ঞতাভিত্তিক হওয়ায় মূল্যায়নও সমন্বিতভাবে হবে। শিক্ষকের পাশাপাশি বাবা-মা মূল্যায়ন করবেন।

এক শিক্ষকের অভিযোগ, বাচ্চারা না শিখেই বাবা-মায়ের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিচ্ছেন। বাচ্চারা না শিখলেও ভালো মূল্যায়নে বাবা-মা স্বাক্ষর দিয়ে দিচ্ছেন। সন্তান জেনে যাচ্ছে বাবা-মা দুর্নীতিবাজ, তার কাছ থেকে আপনি উচ্চ নৈতিকতা আশা করতে পারবেন না। আপনি দুর্নীতিবাজ হলে, আপনার সন্তানও কিন্তু জড়িয়ে যাবে নানান অনৈতিক কাজে। যেখানে আমরা আজ হতাশার সাগরে নিমজ্জিত, সেখানে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিয়ে কী ভাবতে পারি? তারা কি অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে না? এক চরম অবক্ষয় পুরো সমাজে ছেয়ে গেছে। এ অবক্ষয় ধীরে ধীরে সবাইকে কলুষিত করছে। এর বিরুদ্ধেই এখন লড়াই করতে হবে। নৈতিকভাবে কোনো ধর্মই অন্যায়-দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় না। বেশির ভাগ মানুষই ধার্মিকতার লেবাসে চলেন অথচ ধর্মের মূলনীতিগুলোও বাস্তবজীবনে প্রতিপালন করেন না। যে দেশের জনগণের নৈতিক অধঃপতন হয়, সে দেশ প্রচুর সম্পদের অধিকারী হলেও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জন করতে পারে না। আপামর জনসাধারণের উন্নতি ব্যতীত কতিপয় লোকের উন্নতির দ্বারা কোনো দেশ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হতে পারে না। অতএব একটি দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা, উন্নতি ও প্রগতির জন্য প্রয়োজন নৈতিক শিক্ষা। সাধারণত মানুষ ঘর ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকে নৈতিক শিক্ষা লাভ করে। সমাজে কোনো ব্যক্তি প্রতিভাবান কিংবা প্রচুর সম্পদের অধিকারী হতে পারে, কিন্তু তার নৈতিক অধঃপতন ঘটলে, সে ব্যক্তি দেশকে কিছু দিয়ে যেতে পারে না। অন্যদিকে নৈতিকভাবে উন্নত, সৎ, বিবেকবান মানুষ যে পদেই থাকুন না কেন, তিনি সমাজ ও জাতির বড় সম্পদ। তাকে দিয়ে উপকার না হলেও অন্তত কারও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। কেবলমাত্র বিবেক ও নৈতিক জ্ঞানই মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে।

আমাদের সমাজ জীবনে আজ দারুণ হাহাকার। বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপ মারাত্মক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্নীতির ক্ষতির পরিমাণ ও পরিধি এত ব্যাপক যে, এর কালো থাবা থেকে কেউ রেহাই পায় না। দুর্নীতি একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সুশাসন, সুস্থ ও সহনশীল রাজনৈতিক বিশ্বাস ও স্থিতিশীলতা এবং সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। দুর্নীতি দারিদ্র্যসহ সব ধরনের অবিচার বাড়ায়। মানুষে মানুষে বৈষম্য সৃষ্টি করে। এর ফলে মানুষ তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। দুর্নীতি সমাজে অপরাধপ্রবণতা ও মানুষের অসন্তুষ্টি বৃদ্ধি করে। মোট কথা হলো- দুর্নীতির মাধ্যমে আমরা একে অপরকে ঠকিয়ে জিততে চাই।

এখানে মূলত আমরা কেউই জিতছি না। পৃথিবীর সব দেশেই দুর্নীতি কম-বেশি আছে। সমূলে দুর্নীতি উচ্ছেদ করা হয়তো সম্ভব নয়, কিন্তু সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা কোনো কঠিন কাজ নয়। দরকার সদিচ্ছার। দরকার জনগণকে শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা। শিক্ষিত, সচেতন ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বলীয়ান নাগরিকরাই কেবল পারে দুর্নীতিকে ‘না’ বলতে। দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রে ‘না’ বলতে হলে সে দেশের সংসদ, বিচার বিভাগ ও জনপ্রশাসনের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ী সমাজ ও বড় কোম্পানিগুলোকেও দুর্নীতিকে না বলতে হবে। ব্যবসায়ীরা দুর্নীতিকে ‘না’ বললে অন্যদের ‘হ্যাঁ’ বলার সুযোগ থাকে না। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্য থেকেই দুর্নীতি পরিপুষ্টতা লাভ করে। দুর্নীতি সব ধরনের মূল্যবোধ ও ন্যায়নীতির প্রতি মানুষের অনীহা সৃষ্টি করে। দুর্নীতি মানুষের সহজাত কু-প্রবৃত্তিগুলোর অন্যতম হওয়ায় এর দমন ও রোধকল্পে যুগে যুগে বহু বার্তাবাহক ও সমাজ সংস্কারক এসেছেন। প্রণীত হয়েছে বহু আইনকানুন ও নিয়মনীতি। গঠিত হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা। দুর্নীতি আসলে একটা কঠিন চক্র। এই চক্রকে ভাঙতে হলে সবাইকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদেরকে ঘৃণা করতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের ঘাড়ে সব দায়িত্ব দিলে লাভ হবে না।

তাদের একার পক্ষে দুর্নীতির শিকড় উপড়ানো সম্ভব নয়। দুর্নীতি থামাতে জনগণের সোচ্চার আন্দোলন দরকার। এ ক্ষেত্রে সরকার, সুশীল সমাজ, এনজিও, দুদক-কেউই জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারেনি। সবাই জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে যে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস দরকার, সেটা কবে জেগে উঠবে-এটা দীর্ঘ সময় ধরে একটি প্রশ্ন হয়েই আছে। এই ঘুম ভাঙাতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস নিতেই হবে। গত এক যুগে অর্থনৈতিক নানা সূচকে আমাদের দারুণ অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু দুর্নীতির রাশ টেনে ধরতে না পারলে কোনো উন্নয়নই টেকসই হবে না, উন্নয়নের সুফল জনগণের কাছে পৌঁছাবে না। যত উন্নয়ন, তত দুর্নীতি; এই যদি হয় বাস্তবতা, তাহলে বৈষম্য আরও বাড়বে।

Share on facebook
Facebook
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed By : F.A. Creative Firm Ltd.