Blog

মানুষ কেন চিকিৎসা সেবায় অবহেলিত হবে,,

পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে একটা আস্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে। এরপরও সামান্য অসুখবিসুখ নিয়ে কেন এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের জেলা হাসপাতালে যেতে হয়, সে খবর আছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে? প্রথম আলো জানাচ্ছে, ২০০৮ সাল থেকে কাগজে-কলমে ইন্দুরকানিতে হাসপাতাল চালু আছে।

৯ বছর পর ৩১ শয্যার হাসপাতাল ৫০ শয্যাও হয়েছে। কিন্তু পানির ব্যবস্থা না থাকায় অন্তর্বিভাগ চালু করা যায়নি। এখন পানি আছে, কিন্তু রোগনির্ণয়ের ব্যবস্থা নেই। চিকিৎসকের ১০ পদের ৭টি শূন্য। মেডিসিন, শল্য, প্রসূতি ও অবেদনবিদ পদে চিকিৎসক নেই। ডেন্টাল সার্জন ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার (আরএমও) পদও শূন্য রয়েছে। যে এলাকায় লক্ষাধিক মানুষের বাস, সেখানে চিকিৎসক আছেন মাত্র তিনজন।

স্বাস্থ্য খাতের কর্তাব্যক্তিদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয় এই খাতে আর কোনো সমস্যা নেই, সব সমাধান হয়ে গেছে। এ কথা সত্য যে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে পেরেছে বাংলাদেশ। কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে বিদেশিরা বাহবা দিয়েছে। কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক বসেন না।

ওখান থেকে সাধারণ মানুষ ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ২৭ ধরনের ওষুধ ও পরামর্শ পান। চিকিৎসার প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। সেদিক থেকে মফস্‌সলের মানুষের প্রধান আশ্রয়স্থল হওয়ার কথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, পিরোজপুরের ইন্দুরকানিতে শুধু অবকাঠামো আছে, চিকিৎসাসেবা নেই বললেই চলে।

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও ৭২টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আছে। এর আগে বহুবার কথা হয়েছে যে শেষ বর্ষে মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা গ্রামে গিয়ে মানুষের সেবা দেবেন।

সেটা শুধু কথার কথাই হয়ে আছে। চিকিৎসক–সংকটের প্রশ্ন উঠলেই প্রয়োজনের তুলনায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অপ্রতুলতার কথা শুনতে হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কি কোথায় কোন বিভাগের কতজন চিকিৎসক প্রয়োজন, সে হিসেবে পদায়ন করে থাকে? থাকলে একটা হাসপাতালের তো বছরের পর বছর এভাবে পড়ে থাকার কথা নয়।

তা ছাড়া সরকারি–বেসরকারি খাতে হেলথ টেকনোলজিস্টদের জন্য ইনস্টিটিউট আছে। বছরজুড়েই দেশের নানা জায়গায় মেডিকেল কলেজ, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিস্ট তৈরির আলোচনা শোনা যায়। অথচ ২০০৮ থেকে চলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে থাকা বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে বলা আছে, তারা উপজেলা, জেলা হাসপাতালগুলো পরিদর্শন করবেন। সে অনুযায়ী সুপারিশ চূড়ান্ত ও বাস্তবায়ন করবে। আদৌ কি তা যথাযথভাবে করা হচ্ছে? হলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? আমরা চাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের কোন হাসপাতালের কী অবস্থা, সেই খোঁজ রাখুক। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিক। কারণ, সবার জন্য সাশ্রয়ী ও মানসম্মত চিকিৎসাসেবা দিতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

Share on facebook
Facebook
Share on telegram
Telegram
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on twitter
Twitter

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed By : F.A. Creative Firm Ltd.